বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রনে আনতে সরকার সান্ধ্য আইন জারি করেছে। এই আইনের বলে কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করা হয়।
“সান্ধ্য আইন”-এর আক্ষরিক অর্থ সন্ধ্যার সময় বা সন্ধ্যার পরে রাস্তায় চলাচলের নিয়ম কানুন। সান্ধ্য আইনের ইংরেজি শব্দ curfew কার্ফ্যু, যা এসেছে ফরাসি ভাষার শব্দ couvre-feu কূভর-ফ্যু হতে। শব্দটির আক্ষরিক অর্থ অগ্নি-নির্বাপণ। মধ্যযুগে ইংরেজি শব্দ ভাণ্ডারে curfeu হিসেবে আত্তীকরণ হয় পরে আধুনিক যুগে সেটির বানান হয় curfew। উইলিয়াম দি কনকরারের মতে এই শব্দটির প্রকৃত অর্থ হল “কাঠের বাড়ি ঘরে জ্বালানো অগ্নিশিখা এবং আগুনের প্রদীপ থেকে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য রাত আটটার ঘণ্টা বাজবার মধ্যেই সকল অগ্নিশিখা ও আগুনের প্রদীপ নিভিয়ে ফেলার নিয়ম”।
এই আইনের অধীনে ডাউনটাউন সান ফ্রান্সিসকো ২০২০ জর্জ ফ্লয়েড বিক্ষোভের সময়জর্জিয়ার আটলান্টায় সশস্ত্র পুলিশ কারফিউ বলবৎ করে। আধুনিককালে এই আইনে কোনও একটা নির্দিষ্ট সময়ে চার জনের বেশি মানুষকে একত্রে কোনও পাবলিক প্লেসে জমায়েত হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য সান্ধ্য আইন বা কারফিউ জারি করা হয়। কোনও জায়গায় দাঙ্গা বা জনরোষ যখন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দেয়, আর পুলিশ সাধারণ জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে অসমর্থ হয় তখন এই আইন জারি করা হয়। সমস্যার মাত্রার ওপর সান্ধ্য আইন বা কাউফিউয়ের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। কখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। কোথাও কোথাও রাতে কারফিউ জারি হয়, কোনও জায়গায় দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য জারি করা হয়। আবার অবস্থা বুঝে সময় অল্প সময়ের জন্য কারফিউ তুলে বা শিথিল করে দেওয়া হয়, যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় কাজ এবং নিজের বাজার-হাটের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারে।
এই আইন জারি হলে সবাইকে বাড়ির ভেতরে থাকার আদেশ দেওয়া হয়ে থাকে। এই কারফিউ দেওয়ার কারণ হলো, কেউ যেন ঘরের বাইরে জমায়েত হয়ে দল বেঁধে আবার কোনও অশান্তি বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।
বাংলাদেশে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সালে ২৪ ধারা অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নিয়ন্ত্রন এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আদেশ জারির মাধ্যমে নির্দেশ করতে পারেন । যেকোনও বিশেষ লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। উপর্যুক্ত আইন লঙ্ঘন করলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানার বিধান সংবিধানে রয়েছে।