গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক দেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে তারা গুমের শিকার হয়েছিলেন তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে কমিশনের প্রধান করা হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা হলেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন। দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ৪(৩) ধারার ক্ষমতাবলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) এ কমিশন গঠন করেছে।
কমিশনকে ২০১০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক অর্থাৎ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সিআইডি, বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, সন্ধান, তাদেরএবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা এবং গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করতে কমিশনকে বলা হয়েছে। আরোও বলা হয়েছে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনকে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা অসংখ্য মানুষ গুমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। ২০২২ সালে হংকংভিত্তিক এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের এক রিপোর্টে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬১৯ জন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটকের পর লাপাত্তা হয়ে গেছেন। কমপক্ষে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৬৫৮ জন মানুষ। যদিও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এসব অভিযোগকে পাত্তা দেয়নি। স্বজনদের গুমের ঘটনায় ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। যা সাড়া ফেলে জনসাধারণের মধ্যে।