সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে, ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের আগে গণমাধ্যমকে চাপে রাখার এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা কটূক্তি ও অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডগুলোকে আড়াল করতে নানা হুমকি-ধামকিতে ব্যস্ত ছিলেন আলী আরাফাত। ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মধ্যে গত ২১ জুলাই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “সরকার যদি প্রতি সেকেন্ডে রাবার বুলেট ছোঁড়ে, তারপরও পাঁচ বছর লাগবে শেষ হতে।”
পর দিন, ২২ জুলাই, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে নিহত আবু সাঈদের প্রসঙ্গকে পরোক্ষভাবে উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, “প্রমাণ পাওয়া গেছে, আন্দোলনকারীদের অনেকে ড্রাগড। তাদের ড্রাগ দেওয়া হয়েছে যেন তারা বুক পেতে পুলিশের সামনে চলে আসতে পারে।”
পরে এই আরাফাতই দাবি করেছিলেন, “আমরাও শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে। তারা যে দাবি করেছে, সরকারও সেই একই দাবিতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে গেছে।”
এদিকে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) আরাফাতের আটক হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি এর সত্যতা নিশ্চিত করেননি। আটক নাকি না আটক তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে- ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে আরাফাতকে আটক করা হয়নি। অন্য কোনো বাহিনী কর্তৃক আটক হয়েছে কি না তাও নিশ্চিত করা হয়নি। গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে আলী আরাফাতকে আটক করা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাহিদুল ইসলামের নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ৪৬ জন ওই মামলার আসামি। এটি ছাড়াও আরাফাতের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গত ১৪ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, আরাফাত ঢাকায় ফরাসি দূতাবাসে লুকিয়ে রয়েছেন। পরে দূতাবাস জানায়, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এর আগে, শেখ হাসিনার পতনের পর ১২ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ আরাফাত, তার স্ত্রী এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশনা সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়।