প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন দেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ। তিনি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, দেশের সংস্কারের দাবিতে রাজপথেও সরব ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের বিচারের দাবিতে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’-তে অংশ নিতে নারীদের আহ্বান জানান বাঁধন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সোচ্চার অবস্থানও সকলের নজর কেড়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে বাঁধন নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়। কিছু নেটনাগরিকের প্রশ্ন, আসলে কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি সমর্থন রাখেন তিনি? কারণ, বাঁধনকে কখনো আওয়ামী লীগ নেত্রী সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তারানা হালিমের সঙ্গে দেখা যায়, আবার কখনো বিএনপির রুমিন ফারহানা ও নুরুল হক নূরের সঙ্গেও দেখা যায়।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে, যার ফলে নেটনাগরিকদের একাংশ বাঁধনকে ‘সুযোগসন্ধানী’ বলে মন্তব্য করছেন। যদিও বাঁধন ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার।
২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকায়, ২০২০ সালের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলামের প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। তৎকালীন নির্বাচনী প্রচারণায় তারানা হালিম, নায়ক রিয়াজ ও বাঁধনের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
বাঁধনের সাবেক ভালো সম্পর্ক ছিল সাবেক এমপি তারানা হালিমের সঙ্গে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে অংশগ্রহণও করেছেন তিনি।
তবে, বাঁধনের ভক্তদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, ২০২৪ সালে এসে কেন তিনি আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান নিলেন। সম্প্রতি, ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার খরচের হিসাব দেখতে চাওয়ার পাশাপাশি, সিনেমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বাঁধন।
এছাড়া, বাঁধন অভিযোগ করেছেন যে, তিনি ভারতের ভিসা পাচ্ছেন না এবং তার নাম ব্ল্যাকলিস্টে রয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশন তার ভিসার আবেদন চারবার বাতিল করেছে। বাঁধনের দাবি, তার ভিসা বাতিলের কারণ হলো, ভারতের সাথে তার ছবি থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বাঁধনের ছবি দেখে কিছু নেটনাগরিক নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, “বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়। গতকালকে ছাত্র সমাজের কাছে সুশীল ছিলেন, আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “যারা আন্দোলন করছে তারা আসল বিএনপির লোক। বাঁধন রাজপথে কেঁদেছে, তার আসল পরিচয় সবাই জেনে নিক।”
এদিকে, এই বিষয়ে বাঁধনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।