নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের কুজাপাড়া গ্রামের গরীব কৃষক কেরামত আলী। তিনি পাশের গ্রামের আইয়ুব আলীর কাছ থেকে গত ২০২০ সালে ১০ কাঠা জমি ক্রয় করে পরেছে মহা বিপদে। ক্রয়কৃত জমি জবর দখল করে ভোগ করছে প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বিচার শালিশে পাচ্ছেন না কোন সমাধান। উল্টো প্রভাবশালীরাই মামলা করছে, বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি, হামলা করে কেরামতকে নাজেহাল বানিয়েছেন প্রভাবশালী সরকারী চাকুরীজিবী, কোর্টের পেসকার ও উকিলের সহকারী।
অভিযোগ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর ইউনিয়নের কুজাপাড়া গ্রামের কেরামত আলী (৬৫) পাশের গ্রামের আইয়ুব আলীর কাছ থেকে ২০২০ সালে কুজাপাড়া মৌজার ৩১৬,৩৬১ ও ৩৬৫ এই তিন দাগে মোট ১০ কাঠা জমি ক্রয় করেন। ক্রয় করার পর থেকেই জমির উপর লোলুপ
দৃষ্টি পরে প্রভাবশালী প্রতিবেশী নওগাঁ কোর্টের পেশকার হাফিজুল ইসলাম, প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর, সালেক, দেলোয়ার , উকিলের সহকারী (মোহরী) মেহেদী হাসান সুমন ও তার স্ত্রী রুমা বেগম, জলিল ও তার স্ত্রী শেলী খাতুন ও জোসনা বেগম ও ইউসুফ গংদের ।
তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ২০২৩ সালে ক্রয়কৃত জমি থেকে কেরামত আলীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বিতাড়িত করে। অর্থ ও শক্তির কাছে হার মেনে জমি থেকে বিতাড়িত হয়ে ভুক্তভোগী প্রথমে গ্রামে মাতব্বরদের কাছে অভিযোগ করেন। পর পর কয়েক দফা গ্রাম্য শালিশের রায় করেও রায় পায় জমির বৈধ মালিক কেরামত আলী। কিন্তু অর্থ ও পেশিশক্তির ভয়ে জমির মালিকানা পাচ্ছেন না বরং কেরামত আলীর উপর ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে নওগাঁ কোর্টের উকিলের সহকারী (মোহরী) মো: মেহেদী হাসান। মামলা নং-১১০সি/২০২৪ (নওগাঁ) ও ১৩৮/২০২৪(নওগাঁ)। জমির দখল না পেয়ে এবং তিনি মামলার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবার পরে কীর্ত্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের শরনাপন্ন হন কেরামত আলী।
চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে দুই পক্ষকে একত্রিত করে শালিশ করেন । শালিশে মৌখিক রায় দেন কৃষক কেরামত আলীর পক্ষে। কিন্ত সেই রায়ও অমান্য করে অবৈধভাবে জমি দখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা। অবশেষে থানায় অভিযোগ করলেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী গরিব কৃষক।
এ বিষয়ে কুজাপাড়া গ্রামের মাতব্বর স্বপন আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কেরামত আলীর জমি নিয়ে আমরা গ্রামে একাধিকবার শালিশ করেছি। সেই জমির বৈধ মালিক কেরামত আলী হবার পরও প্রভাবশালীরা জোড় করে মারধর করে জমি থেকে তাকে বিতাড়িত করেছে। আমরা বার বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। লোকটি জমি নিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কীর্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ডাবলু’র সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, কেরামত আলীর ক্রয়কৃত জমি নিয়ে একাধিক বার শালিশ হয়েছে। জমির বৈধ মালিক কেরামত কিন্ত পেশী শক্তির কারনে জমি দখল পাচ্ছেন না। আমরা তাদের পেশিশক্তির কাছে দাড়াতে পারছি না।
নওগাঁ সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর রবিন্দ্রনাথ সরকারের সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন এবং কাগজপত্র অনুসারে কৃষক কেরামত আলীকে জমিটি বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেও অপর পক্ষের অসহযোগিতার কারনে তা সম্ভব হয়নি বলেজানান তিনি।