৭ই নভেম্বর স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় : রিজভী
“১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সেইদিন যেদিন আমাদের স্বাধীনতা পূর্নতা লাভ করেছে। ৭১ সালে আমরা ভৌগোলিক স্বাধীনতা পেলেও নাগরিক স্বাধীনতা ও কথা বলার স্বাধীনতা ছিলোনা। ”
বৃহস্পতিবার (২৮নভেম্বর) বিকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে(রাবি) অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর ১৯৭৫ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের মহানায়ক জিয়াউর রহমান” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানেনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন,এরশাদ কোনো বৈধ শাসক নন। তিনি একটি গনতান্ত্রিক সরকারকে বন্দুকের নলের মুখে সরিয়ে দিয়ে জোর করে রাতের অন্ধকারে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। সত্যের আলোয় সেদিন এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। রাষ্ট্র ও সমাজের সংকটে কিভাবে দাড়াতে হয় সেই শিক্ষা পেয়েছি এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জীবন মরণের অনেক বিষয়ের সাথে অত্যন্ত সংশ্লিষ্ঠ এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় যেকোনো সত্যের আন্দোলন, ন্যায়ের আন্দোলন, গণতন্ত্রের আন্দোলন, স্বাধীনতার আন্দোলন, সার্বভৌমত্বের আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কখনো পিছুপা হটে নি। তাদের দূর্জয় সাহস, ধমনীর মধ্যে প্রবাহমান উষ্ণ রক্তের ধারা সেটা দিয়ে রাজপথে নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিতা হাতে কুড়াল নিয়ে গনতন্ত্রের বৃক্ষকে কেটে টুকরো টুকরো করে বাকশাল গঠন করলেন। সেই বাকশালের বিষবৃক্ষ উপরে দিয়ে সেদিন ক্যন্টনমেন্ট থেকে সিপাহি এবং বাড়ি বাড়ি থেকে জনতা রাস্তায় নেমে পড়ে। ৭ নভেম্বরের চেতনা ছিলো স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও প্রতিষ্ঠিত করা। সার্বভৌমত্বকে অটুটভাবে শক্তিশালী করাই হচ্ছে ৭ নভেম্বর। আমাদের মুক্তভাবে কথা বলা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হচ্ছে ৭ নভেম্বর। জাগরিত চেতনা হচ্ছে ৭ নভেম্বর। যারা আমাদের পরাধীন রাখতে চেয়েছিলো, যারা মনে করেছিলো, তাদের পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতিকে অনুকরন করতে হবে আমাদের, যারা মনে করেছিলো তাদের সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হতে। ।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম। বলেন, ১৯৭১ সালের ২৭ই মার্চ আমরা একটা ঘোষণা শুনতে পেয়েছিলাম যেখানে বলা হয়েছে আমি মেজর জিয়া বলছি। যেসময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা মঞ্চে থাকার কথা,আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা সেসময় রাজনৈতিক নেতাকর্মী অর্থাৎ আওয়ামিলীগের কোনো নেতাকর্মীকে পাওয়া যায়নি। যখন দিশেহারা ছিলো, কি করবে তারা বুঝতে পারতেছিলো না ঠিক সেসময় এই ঘোষণাটি আমাদের উজ্জীবিত করেছিলো। আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশকে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলা৷ মূল লক্ষ্য ছিলো বাক স্বাধীনতা, সংবাপত্রের স্বাধীনতা ও অন্যান্য সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু ৭২ এর পরবর্তী সরকার এই দেশে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলো । জনজীবনে নিরাপত্তার অভাব, নৈরাজ্য ও দুর্ভিক্ষে এদেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ৫ আগস্টের পর আজ ৩ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও ফ্যাসিস্ট শক্তি বাংলাদেশ কে পিছিয়ে দেওয়া জন্য গভীর ষড়যন্ত্রের লিপ্ত রয়েছে ঠিক তেমনি ষড়যন্ত্র হয়েছিলো ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহি জনতার বিল্পবের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিপ্লবের যে স্পিরিট ধারণ করা হয়েছিলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য ৫দশকেরও বেশি সময় ধরে যে আন্দোলন করে সে আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে গিয়ে ২০২৪ সালের বিপ্লবে একশোরও বেশি নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন এবং দুই হাজারের অধিক আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের নিদেশনার আলোকে বাংলাদেশের প্রায় দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে কি ভাবে একুশ শতক উপযোগী ছাত্ররাজনীতি করা যায় তার দ্রুত রোডম্যাপ দিবে বাংলাদেশ ছাত্রদল এবং প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নো হার্ম প্রিন্সিপাল পলিছি নির্ধাণ করেছে৷ বাংলাদেশের ছাত্রদলের রাজনীতি এবং রাজনীতির কোনো কার্যক্রমের বাংলাদেশের কোনো শিক্ষার্থী যেন কোনো ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও রাবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সভাপতিত্বে রাবি ছাত্রদল ও রাজশাহী মহানগরীর প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দীন//বিএন