সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া তিন বন্ধুর মধ্যে ১৬ ঘণ্টা পর দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে রাজশাহী ডুবুরি দল।
এর আগে, নিখোঁজের চার ঘণ্টার মাথায় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ঝাঁটিবেলাই এলাকা থেকে বাকি দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত তিনজন হলেন—সিরাজগঞ্জ শহরের মাসুমপুর মহল্লার ইমরুল হাসান সোহেলের ছেলে সারজিল (১৬), বাহিরগোলা ঘোষপাড়া মহল্লার মৃত বিশ্বজিৎ নিয়োগীর ছেলে কৃষ্ণ নিয়োগী (১৫) এবং ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ঝাঁটিবেলাই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রাফিন ইসলাম (১৫)। তারা সবাই সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঝাঁটিবেলাই গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক রঞ্জুর নাতি জারিফের বাড়িতে তার পাঁচ বন্ধু বেড়াতে আসে। বিকেলে তারা ছয়জন মিলে স্থানীয় ফুলজোড় নদীতে গোসল করতে নামে। একপর্যায়ে তিনজন গভীর পানিতে তলিয়ে যায়, আর বাকি তিনজন সাঁতরে তীরে উঠে আসে।
স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রথমে রাফিন ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর রবিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে সারজিল এবং দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে কৃষ্ণ নিয়োগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ওয়ারহাউস ইন্সপেক্টর অপু কুমার মণ্ডল জানান, নদীর গভীরতা ২৫ থেকে ৩০ ফুট হওয়ায় উদ্ধার কাজে দীর্ঘ সময় লেগেছে। রাজশাহী ডুবুরি দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন এবং ১৬ ঘণ্টা পর বাকি দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেসুর রহমান জানান, নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে ছিল। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত তিন শিক্ষার্থীর আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।