রমজান মাস মুসলিমদের জন্য পবিত্র এক সময়, যেখানে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস পালনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করা হয়। তবে, যারা ইটিং ডিসঅর্ডারে (খাদ্য গ্রহণজনিত সমস্যা) ভুগছেন, তাদের জন্য এই সময়টি বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করলে ইটিং ডিসঅর্ডার থাকা সত্ত্বেও সুস্থভাবে রোজা পালন করা সম্ভব।
ইটিং ডিসঅর্ডার ও রোজার চ্যালেঞ্জ
ইটিং ডিসঅর্ডার মূলত খাদ্য গ্রহণের অনিয়মজনিত মানসিক সমস্যা, যা অতিরিক্ত খাওয়া, অনাহারে থাকা বা খাওয়ার পর বমি করার প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে। রমজানের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এসব সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে, সচেতনভাবে কিছু পদক্ষেপ নিলে এই সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব।
ইটিং ডিসঅর্ডার থাকলে রোজায় করণীয়
১. নিজস্ব সীমা নির্ধারণ করুন
রমজানে ইফতার পার্টি বা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। যদি এটি আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে, তাহলে নিজের জন্য নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করুন। আপনি ইফতারের পরিবর্তে পরিবারের সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়তে পারেন বা ছোট পরিসরে ইফতার করতে পারেন।
২. সেহরিকে গুরুত্ব দিন
অনেকেই সেহরি এড়িয়ে যান, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ইটিং ডিসঅর্ডার থাকলে সেহরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সারাদিনের জন্য শক্তি জোগায়। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং জটিল কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খান, যাতে দীর্ঘক্ষণ শক্তি বজায় থাকে।
৩. মানসিক প্রস্তুতি ও সংকল্প
রমজানে সুস্থ থাকার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া জরুরি। প্রথমদিকে কঠিন মনে হলেও নিয়ম মেনে চললে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। নিজের অনুভূতির ওপর নজর রাখতে একটি জার্নাল রাখতে পারেন, যেখানে প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা ও মানসিক অবস্থা লিখে রাখবেন।
৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন
নিয়মিত নামাজ মানসিক প্রশান্তি আনতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মনোযোগ সহকারে নামাজ আদায় করলে মানসিক চাপ কমে এবং মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে।
৫. প্রতিরোধ পরিকল্পনা তৈরি করুন
যদি মনে হয় রমজান মাসে ইটিং ডিসঅর্ডারের লক্ষণগুলো বেড়ে যেতে পারে, তবে আগেই একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা তৈরি করুন। প্রয়োজনে একজন থেরাপিস্টের পরামর্শ নিন।
সঠিক পরিকল্পনা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইটিং ডিসঅর্ডার থাকা সত্ত্বেও সুস্থভাবে রোজা পালন করা সম্ভব। তাই, সচেতনতার সঙ্গে রোজা রাখুন এবং নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার যত্ন নিন।