ভারতে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলার কৈলাসপুর পাওয়ার হাউসে কর্মরত বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাকিব খান নামের এই ব্যক্তি পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সকালে নামাজের পরে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
পরে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাকিব খান মূলত চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মকর্তারা তার কর্মকাণ্ডকে “দেশবিরোধী” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গণমাধ্যমকে বলেন:
❝ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাকিব খান যেহেতু একটি ঠিকাদারি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োজিত ছিলেন, তাই সেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে তাকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।❞
সঞ্জীব কুমার স্পষ্ট করেছেন, বিভাগ এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে এবং কোনোভাবেই এমন কাজ বরদাশত করা হবে না। তিনি এও উল্লেখ করেন, এই ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী এবং আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য।
অন্যদিকে, শুধু সাকিব খানের পাশাপাশি ঈদের দিন সাহারানপুরে আরও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত অব্যাহত গণহত্যার প্রতিবাদে অনেক মানুষ ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল বের করেন, যা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারেও কাজ করছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ বিষয়ে সাহারানপুরের পুলিশ সুপার ব্যোম বিন্দল বলেন, মিছিলের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অন্য অংশগ্রহণকারীদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, যারা এই কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই এমন কার্যক্রমে জড়িতদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না।
উল্লেখ্য, এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশে রাজনৈতিক উত্তাপও বাড়িয়ে তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমে নানা বিতর্ক ছড়িয়েছে। পাশাপাশি, এ ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্য যোগীনাথ প্রশাসনের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষেরও সমালোচনা করছেন অনেকে। কেউ কেউ ঘটনাটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করলেও প্রশাসন এর কঠোর বিরোধিতা করেছে।