দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে উপাচার্য বরাবর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হলেও অদৃশ্য কারণে বারবার থেমে গেছে তদন্ত কার্যক্রম। কন্ট্রোলার অফিসে জাল সার্টিফিকেট রেড মার্ক করে রাখা হলেও নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা।
নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে চাকরি পেতে সহযোগিতা করেছেন অনেককেই। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
এমন সব অসাধ্য সাধন করেছেন যিনি তিনি জনাব কাউসার আলম। ২০০১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইনস্টিটিউটে চাকরি পান তিনি। ছিলেন পরিচালক অফিস শাখায় কর্মরত। পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারি থেকে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে হিসাব শাখায় ‘হিসাব রক্ষক’ পদে পদোন্নতি নেন। পরবর্তীতে তিন বছর পূর্ণ না করেই ‘হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা’ হিসেবে আবারও পদোন্নতি পান।
এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। চিঠিতে দুদকের তৎকালীন পরিচালক ডক্টর রফিকুল বাসারের স্বাক্ষর রয়েছে। যা বিডিএন71-এর হাতে এসেছে।
চিঠিতে বলা হয়, জনাব কাউসার আলমের এমবিএ সার্টিফিকেট ভুয়া/জাল। এই ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে ‘হিসাব রক্ষক’ পদ থেকে ‘হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা’ হয়েছেন। ‘হিসাব রক্ষক’ পদটি হিসাব শাখার আর ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ পদটি পরিচালক অফিস শাখার।
পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারি পদ থেকে অন্য আরেকটি শাখা অর্থাৎ হিসাব শাখায় হিসাব রক্ষক পদে পদোন্নতি পায় কিভাবে? তাছাড়া ব্যক্তিগত সহকারি পদটি ‘ব্লক পোস্ট’। এই দুটি বিষয় বিবেচনায় এনে উল্লেখিত সে কোনোভাবেই পদোন্নতি পেতে পারেনা অথবা ব্লক পোস্ট থাকার কারণে আইনত পদোন্নতির কোন সুযোগ নেই। তবে শুধুমাত্র তার বেতন স্কেল আপগ্রেড হবে।
হিসার রক্ষক পদে তার চাকুরী তিন বছর পূর্ণ না করেই কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেয়েছেন এটাও নিয়ম মেনে করা হয়নি।
সূত্র জানায়, কাউসার আলমের জাল সার্টিফিকেটের বিষয়টি সামনে আসায় তিনি বর্তমানে ইনস্টিটিউট পরিচালকের অনুমতি নিয়ে মিরপুরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়েছেন।
কাউসার আলম এর বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আছে, ঠিকাদারদের থেকে অর্থ নিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার। মিরপুরে ফ্ল্যাট সহ বিভিন্ন জায়গাতে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে বলে শোনা যায়।
এছাড়া নিয়োগ-বাণিজ্যে এসেছে তার নাম। লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এর স্টোর কিপার আব্দুল কাইয়ুম, ডেমোনেস্ট্রেটর আতিকুল ইসলাম, ফাহিম হোসেন, মালি পদে রাজু, কম্পিউটার অপারেটর মনিরের থেকে ৫- ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে চাকরি পেতে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে কাওসার আলমকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেন নি। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো প্রতিউত্তর পাওয়া যায় নি।
লেদার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিডিএন71-কে জানান, আমি পরিচালক হিসেবে আসার আগেই তার পদোন্নতি হয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।