ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি পাওয়ার লিমিটেড ২০০ কোটি ডলারে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে, যার উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি হয়।
শেখ হাসিনার আমলে টেন্ডার ছাড়াই করা এই চুক্তিতে অতিরিক্ত দামে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়টি নিয়ে তখন থেকেই সমালোচনা চলছিল।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে আদানি পাওয়ারের বিরুদ্ধে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানি পাওয়ার ভারত সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত কর অব্যাহতির সুবিধা বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেনি।
নথি বিশ্লেষণ ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জানা গেছে, এই কর সুবিধা হস্তান্তর হলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে প্রায় ০.৩৫ সেন্ট কম খরচ হতো, যার ফলে বছরে প্রায় ২৮.৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারত বাংলাদেশ।
২০১৭ সালে আদানি ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, কর অব্যাহতির তথ্য দ্রুত জানানো এবং সেই সুবিধা বাংলাদেশকে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল আদানি পাওয়ারের। তবে বিপিডিবি থেকে দুই দফা চিঠি পাঠানো হলেও কোম্পানিটি কোনো উত্তর দেয়নি।
এদিকে, আদানি পাওয়ার দাবি করেছে, তারা চুক্তির সব শর্ত পূরণ করেছে এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত পায়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ বিষয়ে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আদানি পাওয়ারের সরবরাহ ছাড়াই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব।
নতুন সরকার এখন এই ব্যয়বহুল চুক্তি পুনঃপর্যালোচনা করার উদ্যোগ নিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
আরএস//বিএন