আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day) ৮ মার্চ প্রতি বছর উদযাপিত হয় এবং এটি নারী স্বাধীনতা, সমতা ও অধিকার সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এর ইতিহাস বেশ দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস:
১. প্রথম দিক (1900-এর দশক):
- আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সূচনা ঘটে 1908 সালে, যখন নিউ ইয়র্ক শহরের শ্রমিক নারী কর্মীরা সুশাসন, সমানাধিকার, শ্রমের উন্নতি এবং ভোটাধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
- ১৯০৮ সালের ৮ মার্চ, ১৫,০০০ নারী কর্মী তাদের অধিকার এবং শ্রমিকদের শর্তের উন্নতি চেয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
-
১৯১০ সালে ক্লারা জেটকিনের উদ্যোগ:
- 1910 সালে, জার্মান সমাজতন্ত্রী ও নারী অধিকার কর্মী ক্লারা জেটকিন আন্তর্জাতিক নারী দিবসের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি ২৯টি দেশের প্রতিনিধিদের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণাটি উত্থাপন করেন এবং এই দিনটি প্রতি বছর ৮ মার্চ উদযাপন করার প্রস্তাব দেন।
-
১৯১৭ সালে রাশিয়া:
- 1917 সালের ৮ মার্চ, রাশিয়ায় মহিলারা খাবার এবং পণ্য সরবরাহের জন্য ধর্মঘট শুরু করে, যা পরে রুশ বিপ্লবের একটি মূল অনুষঙ্গে পরিণত হয়। রুশ নারী কর্মীরা যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা রুশ অস্থিরতার সূচনা করে এবং পরবর্তীতে ১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবের দিকে পরিচালিত হয়।
-
সংগঠন ও বিশ্বব্যাপী প্রসার:
- ১৯৭৭ সালে, জাতিসংঘ (UN) আনুষ্ঠানিকভাবে নারী দিবস উদযাপন করার জন্য ৮ মার্চের দিনটি নির্ধারণ করে। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পৃথিবীজুড়ে পালিত হতে থাকে, যেখানে বিভিন্ন দেশের নারী অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে উন্নতি ও সমতার দাবি তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের উদ্দেশ্য:
- নারীদের অধিকার ও সমতার প্রতি সচেতনতা তৈরি করা।
- নারী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নতি করা।
- বৈষম্য এবং নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য সংগঠিত হওয়া।
- বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদান তুলে ধরা এবং তাদের ক্ষমতায়ন করা।
এই দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়, যেখানে শিক্ষা, সমতা, কর্মক্ষমতা, স্বাস্থ্য এবং আইনগত অধিকারের জন্য নারী সমাজ একসাথে কাজ করার সুযোগ পায়।
আয়নুল/