বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের জেরে স্বৈরশাসনের পতন হলেও হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু অভিযুক্ত এখনও নিয়মিত অফিস করছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি)। ইতিমধ্যে তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি দুই শিক্ষক, সাত কর্মকর্তা ও ৭২ শিক্ষার্থীসহ ৮১ জনকে চিহ্নিত করলেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন আরও ১০ এর অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা দপ্তরে তারা নিয়মিত অফিসও করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করতে হেলমেট পরিধান করে সশস্ত্রভাবে অবস্থান করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগসহ বেশকিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। ৫ আগস্টের পরে তারা গা ঢাকা দিলেও এখন সবার হাতে হাতে ঘুরছে অস্ত্র হাতে তাদের মহড়ার ভিডিও ফুটেজ।
এ ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
পরবর্তীতে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দেওয়ার পর ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক, প্রক্টর ফেরদৌস রহমানকে সদস্যসচিব ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমির শরীফকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পার্কের মোড়, (শহিদ আবু সাঈদ চত্বর) মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে যাদের নাম আসেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত রিপোর্টে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিযোগকারী বলেন, “আমার মতে, আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্য অনুসন্ধান করা দরকার। এতে করে যে অপরাধীরা এখান হতে বাদ পড়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”
এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্য আমির শরীফ বলেন, “আমাদের কমিটি ছিল মূলত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। আমরা (প্রাথমিকভাবে) তথ্য অনুসন্ধান করে যা পেয়েছি তাই জমা দিয়েছি।”