ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা এক বাংলাদেশি নারী শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করে তাকে আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
নিউইয়র্কভিত্তিক অভিবাসন আইনজীবী মঈন চৌধুরী জানিয়েছেন, ওই শিক্ষার্থীর মুক্তির জন্য আইনগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এ ছাড়া, পুরোনো একটি চুরির মামলার রায় হলেও আরেক বাংলাদেশি ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঈন চৌধুরী জানান, কিছু মাস আগে ওই শিক্ষার্থী ৭০ ডলারের একটি পণ্য চুরি করার সময় ধরা পড়েছিলেন। আদালতে দোষ স্বীকারের পর মামলাটি নিষ্পন্ন হলেও, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তারা সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করে। তার ভিসা বাতিল করে তাকে ডিটেনশন সেন্টারে নেওয়া হয়েছে, তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এ দিকে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদের সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে সম্প্রতি এক ডজনেরও বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে নানা সূত্রমতে। তাদের মধ্যে গ্রিন কার্ডধারী এবং পারিবারিক ভিসাধারী—উভয় ধরনের যাত্রী ছিলেন।
এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বা ফিরতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মঈন চৌধুরী।
মঈন চৌধুরী বলেন:
❝গ্রিন কার্ডধারীরা বছরে বেশির ভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রে না কাটালে বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছে। সম্প্রতি অনেককে মুচলেকা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে। যারা বছরে ১০ মাস বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকলে গ্রিন কার্ড বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।❞
অপর দিকে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-করটেজ। ব্রঙ্কসে আয়োজিত এক সভায় তিনি জানান, তার অফিস সবসময় প্রবাসীদের পাশে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে শাহজাহান শেখ নামের এক প্রবাসী জানান, শুধু অবৈধ নন, বৈধ গ্রিন কার্ডধারীরাও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন অভিযানে আতঙ্কে আছেন। কর্মকর্তারা যাকে পাচ্ছেন, তাকেই থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন এবং সঠিক জবাব না পেলে গ্রেপ্তার করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন এ ধরনের অভিবাসন নীতির প্রয়োগ থেকে যদি সরে না আসে, তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অংশীদার দেশগুলোর বহুবিধ ও বহুমুখী কূটনৈতিক এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরবে সহজেই। ফলে এতে করে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই অর্থনীতির অবনমন ঘটতে পারে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।