কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তবে দুর্ঘটনায় ১১ বছরের এক মেয়ে ও ১৬ বছরের এক ছেলেসহ ২৫ জন যাত্রী প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে স্থানীয় সময় এএফপির বরাতে এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে। বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে ২২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাজাখস্তানের জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিমানটিতে ৬২ জন যাত্রী ও ৫ জন ক্রু ছিলেন। আজারবাইজান এয়ারলাইনসের এই ফ্লাইটটি বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি শহরে যাচ্ছিল।
ঘন কুয়াশার কারণে বিমানটিকে আকতাউ, যা গন্তব্য থেকে প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার দূরে, সেখানে পুনর্নির্দেশ করা হয়। আকতাউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করার সময় একটি অজানা সংকট দেখা দেয় এবং জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানানো হয়। তবে বিমানটি রানওয়ে পর্যন্ত পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাখির ঝাঁকের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে বিমানটির স্টিয়ারিং সিস্টেম ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়ে, যা ইঞ্জিন ক্ষতির কারণ হতে পারে। পাইলটরা উচ্চতা ও গতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেন, কিন্তু বিমানটি আর নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
বিমানবন্দর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এটি ভেঙে পড়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে, দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে এটি মাটিতে আছড়ে পড়ে, আগুন ধরে যায় এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
বিএনও নিউজ শেয়ার করা ভিডিওতে পাইলটদের চূড়ান্ত মুহূর্তের প্রচেষ্টা দেখা যায়। আড়াই মিনিটের ফুটেজে মাত্র ৩৬ সেকেন্ডে বিমানটি তীব্র ডাইভে যায় এবং মাটিতে আঘাত হানে। মুহূর্তেই এতে আগুন ধরে যায় এবং এটি টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
দুর্ঘটনাস্থলের ছবি এক মর্মান্তিক দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে। ফিউজলেজ ও টেইলের ধ্বংসাবশেষ ধুলোমাখা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে। সরু একটি মাটির রাস্তার পাশেই ধ্বংসাবশেষগুলো ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
কাজাখ সংবাদমাধ্যম ওআরডিএ প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে কিছু জীবিত যাত্রীকে উদ্ধার করা হচ্ছে। এক বৃদ্ধকে রক্তাক্ত অবস্থায় হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে দেখা যায়। অন্যদিকে, এক সাদা কোট পরা তরুণী ধ্বংসস্তূপের পাশে হতভম্ব অবস্থায় ঘুরছিলেন।
এক কিশোর, যার পোশাক রক্তমাখা ও ধুলোমলিন, তাকে উদ্ধার কর্মীদের সাহায্য নিতে দেখা যায়। দুর্ঘটনাস্থলে বিমানটির একটি অংশে তখনও আগুন জ্বলছিল।
আরএস//বিএন