কুয়াশার পর্দা দুলিয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতের পদধ্বনি

বাংলা পঞ্জিকার পাতা বদলাতে বদলাতে হাজির হয়েছে কার্তিক। ঋতু হিসেবে যা হেমন্তের অন্তর্গত। আগে হেমন্ত ঋতুতেই দেশজুড়ে হিমেল আবহাওয়ার উপস্থিতির ঘটনা স্বাভাবিক হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা এখন আর দেখা যায় না।

তবু হেমন্তের অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গে দেশের উত্তরাংশে দেখা যায় এর ব্যতিক্রম। এবারও হয়েছে তাই। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ইতোমধ্যেই কুয়াশার পর্দা দুলিয়ে শীতের আগমনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে মৃদুভাবে।

মধ্যরাত থেকেই ৭৫ একরের খুদে এই প্রাঙ্গণ ঢেকে যায় কুয়াশায়। তাপমাত্রাও হয় নিম্নমুখী। ভোরে স্বাধীনতা স্মারক মাঠ, সেন্ট্রাল ফিল্ড, হল মাঠ আর ভিসি মাঠের ঘাসে ঘাসে দেখা মেলে বিন্দু বিন্দু শিশিরের। বেলা বাড়তে থাকলে পাল্লা দিয়ে বাড়ে তাপমাত্রাও। তবে নাতিশীতোষ্ণ ভাবই বিরাজ করে অধিকাংশ দিন। বরঞ্চ কোনো কোনো দিন মধ্যাহ্নে বা বিকেলের কয়েক পশলা হৈমন্তিক বৃষ্টিতে কিছুটা শীতের আবহের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে এবং পরীক্ষা দিতে আসেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ নাঈম বলেন, হেমন্তের ভোরে কুয়াশার ছোঁয়ায় আর পাখিদের মৃদু কলকাকলিতে নিজেকে অন্যভাবে আবিষ্কার করছি ক্যাম্পাসে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে সূর্যের দেখা মিলছে, তা খুব তাপদাহে দগ্ধ করছে না। বরং কোমল কিরণের উষ্ণতা ছড়াচ্ছে চারিদিকে। এই নাতিশীতোষ্ণ অনুভূতি আমাদের এনে দিচ্ছে প্রকৃতিকে ভালোবাসার সুযোগ। সবমিলিয়ে সময়টা সত্যিই অসাধারণ।

শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান তন্বী জানান, বেরোবিতে ভোরের কুয়াশার আবির্ভাব জানান দিচ্ছে শীতের আগমনের। সকালবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশির ভেজা ঘাস, গাছের পাতা বেয়ে পড়া শিশির ফোঁটার টুপটাপ শব্দ ইত্যাদি হেমন্তকে করছে আরও সৌন্দর্যমণ্ডিত।

অপর এক শিক্ষার্থী আনিকা তাসনিন নদী বলেন, কুয়াশার সকালে শিশির ভেজা ক্যাম্পাসে ঝরে পড়ে শিউলি ফুল। মিষ্টি রোদ গাছের সবুজ পাতার উপর আপতিত হয়ে হিমশীতল বাতাস আর পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে গড়ে তোলে দারুণ উপভোগ্য পরিবেশ। ক্যাম্পাসের এই রূপ ক্যাম্পাসের প্রতি ভালো লাগাটাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এক কথায়, উত্তরা হেমন্তের এই অনন্য রূপ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে যোগাচ্ছে ভিন্ন ধরনের প্রশান্তির খোরাক। ফুরসত দিচ্ছে নিজেদের সত্তাকে নতুন করে আবিষ্কার করার— ক্লাস-পরীক্ষার নিত্যকার ব্যস্ততার মাঝেও।