খেলাপি ঋণ নির্ধারণে আন্তর্জাতিক রীতি আবারও অনুসরণ শুরু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে প্রকৃত খেলাপির পরিমাণ পৌঁছাতে পারে বিতরণ করা ঋণের ২৫ শতাংশে।
সরকারি সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুটপাটের প্রকৃত চিত্র, এর মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে। আতঙ্কিত না হয়ে বরং সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা ও ঋণ পুনরুদ্ধারে জোর দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, আওয়ামী লীগের প্রায় দেড় যুগের শাসনামলে ব্যাংক থেকে ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে ঋণ প্রদান এবং নীতিমালা শিথিল করার সুযোগে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় পুনঃতফসিলের নামে মন্দ ঋণকে ভালো ঋণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগও দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন বোর্ড এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে সেই গ্রাহককে মন্দ ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তবে এতে খেলাপি ঋণের হার বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হবে এবং তা কমিয়ে দেখানোর কোনো প্রচেষ্টা থাকবে না।
অর্থনীতিবিদরা ব্যাংক খাত পুনরুদ্ধারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তাদের মতে, যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও ড. মোস্তফা কে মুজেরি মনে করেন, জনগণের টাকা উদ্ধারে উদ্যোগ না নিলে ব্যাংকগুলোর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলোতে জমা রয়েছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ইতোমধ্যে ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্যাংক খাতের এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিএন