গাজীপুরে নিহত কাশেমের জানাজা সম্পন্ন, আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি
গাজীপুরে হামলার ফলশ্রুতিতে আহত হয়ে মারা যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী আবুল কাশেমের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় মহানগরের রাজবাড়ী মাঠে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ রাজনীতির নিষেধাজ্ঞার দাবিও তোলা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন মহানগরের জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মো. হোসেন আলী, যিনি বলেন, “যেভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করা উচিত।”
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকার সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. ক. ম. মোজাম্মেল হকের বাড়িতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালায়। খবর পাওয়ার পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা প্রতিহত করতে বাড়িতে গেলেও তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। হামলায় ১৭ জন গুরুতর আহত হন, যাদের প্রথমে তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; কিছুজনকে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার বিকেলে আবুল কাশেম মারা যান। তিনি মহানগরের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার হাজি জামালের পুত্র।
এই হামলার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ আল মোহিত ৯ ফেব্রুয়ারি মামলার মাধ্যমে ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে আনুমানিক ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামায় আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামি হিসেবে আমজাদ মোল্লা নামক একজনকে নামزد করা হয়েছে, যিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগ কর্মী ও সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের ভাতিজা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মামলায় ১৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, নিহত শিক্ষার্থীর ঘটনার সঙ্গে পূর্ববর্তী মামলার সংযুক্তিতে এটি নতুন করে একটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য করা হবে এবং এ হামলায় জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ডা. নাজমুল করিম খান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন আল রশিদ, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. রায়হানুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর জামাতের আমির অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন, গাজীপুর সদর মেট্রো থানার বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস, টঙ্গী পশ্চিম থানার বিএনপির সভাপতি বশির উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ তানভীর, হেফাজতে ইসলামের গাজীপুরের আমির নাসির উদ্দিন এবং গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হাশেমসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও নেতারা উপস্থিত ছিলেন।