জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল হক শহিদের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দিবাগত রাতে তুচ্ছ একটি ঘটনার সূত্রে এই হামলার ঘটনা ঘটে, যার ফলে অন্তত সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, সোমবার রাতে জবি’র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান সম্রাট ধোলাইখাল এলাকার একটি মার্কেটের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি ভুলক্রমে একটি নির্মাণাধীন ঢালাইয়ের উপর পা রাখলে স্থানীয়দের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর স্থানীয়রা তাকে মারধর শুরু করে। সম্রাটের সহপাঠী হাবিবসহ আরও দুইজন সেখানে এসে তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকেও আটক করে মারধর করা হয়।
ফেসবুকে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাসের আশেপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের মুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে উত্তেজিত স্থানীয়রা, যারা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ওয়ারী থানার ৩৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক শহিদের নেতৃত্বে ছিলেন, পুনরায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। রাতভর চলা এই সংঘর্ষে র্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সংঘর্ষের সময় স্থানীয় কয়েকটি বসতঘর ও পঞ্চায়েত ক্লাব ভাঙচুর করা হয়।
এক শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলেন, “নাহিদ হাসান সম্রাটকে বিনা কারণে মারধর করা হয় এবং তার সহপাঠীদের উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও আটক করে মারধর করা হয়। আমরা যখন তাদের ছাড়াতে গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, তখন আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।” তিনি আরো দাবি করেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে আটকে রাখার সাহস তাদের কীভাবে হলো? যারা হামলায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “ঘটনাটি জানার পর আমি সংশ্লিষ্ট থানা গুলোকে কল দিয়েছি এবং তারা দ্রুত ফোর্স পাঠিয়েছে। আটকে রাখা শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।”
ওয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তাজিরুর রহমান জানান, “এটি একটি তুচ্ছ ঘটনা ছিল। তবে এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, বিএনপি নেতা শহিদুল হক শহিদের নেতৃত্বে হামলা হয়। পুলিশ এবং র্যাবের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এখনো কোনো মামলা হয়নি, তবে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছে।