জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও পাশ্ববর্তী এলাকায় প্রতিমাসে সাত থেকে আট হাজার পিছ ইয়াবা সরবরাহ করতেন সম্প্রতি ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামী মামুনুর রশিদ। এমনই বক্তব্য উঠে এসেছে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের মিডিয়া উইয়ের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
‘খন্দকার আল মঈন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে কৌশলে দম্পতিকে ডেকে স্বামীকে হল কক্ষে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী মামুনুর রশিদ বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাশ্ববর্তী এলাকায় প্রতিমাসে সাত থেকে আট হাজার পিছ ইয়াবা সরবরাহ করতেন। তিনি মোবাইলের পাওয়ার ব্যাংক ও জুতার ভেতরে করে প্রতিমাসে তিন থেকে চারবার কক্সবাজার থেকে মাদক আনতেন।প্রতি চালানে প্রায় দুই থেকে আই হাজার পিছ ইয়াবাসহ মাদকসেবীদের চাহিদামতো অন্যান্য মাদকদ্রব্য নিয়ে এসে মাদক কারবারে যুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শিক্ষার্থীদেরকে সরবরাহ করতেন। এছাড়াও তিনি সেসব অছাত্রদের সান্নিধ্যে ক্যাম্পাসে অবাধে বিচরণসহ প্রায়ই হলে অবস্হান করতেন। ‘
তিনি আরও জানান , মামুন পেশায় একজন শ্রমিক হলেও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় ছিলেন ,তার বিরুদ্ধে আটটি মাদক মামলার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তিনি চার বার গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তার এ মাদক ব্যবসার মূল ক্রেতা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় সাবেক শিক্ষাথী। মাদকের সূত্র ধরেই এক বছর আগে মোস্তাফিজের সাথে মামুনের পরিচয় হয়। ‘
কমান্ডার মঈন আরও বলেন, ‘সম্প্রতি সংঘটিত এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বিষয়টি খুবই অ্যালার্মিং। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এখনই আরও কঠোর হওয়া উচিত। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্যাম্পাসে মাদকসহ নানান অবৈধ কাজ ঘটছে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয় রয়েছে। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা চান, আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো। শিক্ষার্থীরা দেশের মানবসম্পদ, জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যতকে আমরা এভাবে নষ্ট হতে দিতে পারি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদদের প্রশ্নোত্তরে জবাবে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে খারাপ বলবো না। কারণ যারা এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারাই আগামীতে দেশ পরিচালনা করবে। তাই আমি মনে করি শুধু এখন না, সব সময় তাদের নজরদারিতে রাখা উচিৎ। কারণ শিক্ষার্থীদের বয়স অনেক কম। গ্রেফতারকৃত মামুনের মতো লোকজন শিক্ষার্থীদের নষ্ট করছে। মামুনের মতো লোকেরাই নিজেদের স্বার্থে, নিজেরা অপকর্ম করার জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক সমাজ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমকে এর দায় নিতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া মেলেনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নং কক্ষে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে আটকে রেখে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানসহ ধর্ষণ করেন এই মামুন।
রবিউল হাসান
জাবি প্রতিনিধি :