জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ তাজউদ্দীন হলের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে মারধরের অভিযোগ এসেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল ইমরান।
আজ বিকেলে হল প্রভোস্ট বরাবর বিচার চেয়ে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন আল ইমরান। তিনি তার অভিযোগপত্রে বলেন, ‘২০ আগস্ট রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে পূর্বেই ছাত্রলীগের সাথে জড়িত কিছু নন এলোটেড শিক্ষার্থী প্রভোস্ট স্যারের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে আমার উপর আক্রমণ করে। এসময় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় আমি ওইস্থান থেকে চলে আসি।’
অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ ব্যাচের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তাজুন, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর, ৫০ ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদসহ আরও অনেকে। এছাড়াও হামলার মদদদাতা হিসেবে নাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের নাটক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজের।
জানা যায়, হলের চলমান বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিটিং করে। সেই মিটিংয়ে যে সিদ্ধান্ত হয় সেটি হলের গ্রুপে পোস্ট করেন ইমরান। মিটিংয়ে অনেকগুলো সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি বিষয় ছিল যে, হলের ৪ এবং ৫ তলার নন এলোটেড যারা আছেন সবাইকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে তাদেরকে এই সময়ের ভিতরে এলোটেড হলে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্য তলার নন এলোটেড দের যারা আছেন সবাইকে হলত্যাগ এর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্য হলে ছিট না পেলে প্রভোস্ট স্যার এর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এই বিষয়টি দেখে হলের যারা নন এলোটেড ছিল তারা সবাই ইমরানের উপর চড়াও হয়।
এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী হলের গ্রুপে আবার পোস্ট করে জানিয়ে দেয়, যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেটি আমার একার নয় বরং মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিল সকলের। এছাড়াও বলেছেন, যেহেতু আমার পোস্টের মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হয়েছে সেই জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী এবং মিটিংয়ের সিদ্ধান্তকে স্থগিত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে সেই রাতে হলের নন এলোটেড শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টকে কল করে হলে ডেকে নিয়ে আসে এবং বিষয়টি অবগত করে। এর পর ভুক্তভোগী ইমরানকে ডেকে পাঠানো হয় জবাবদিহি করার জন্য। তবে যখনই সে আসে তখন নন এলোটেড শিক্ষার্থীরা উত্তজিত হয়ে ইমরানের দিকে ধেয়ে যায় এবং তাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে মারধর করে।
এবিষয়ের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, তিনি আগেরদিন এসে আমাদের সবাইকে বলে গিয়েছিলেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে হল ছাড়তে। আমরা তাকে অনুরোধ করেছিলাম আমাদের সময় দিতে তবে তিনি সময় দেন নি। আবার তিনি দুপুর বেলা এসে পুনরায় আমাদের হল ছেড়ে যেতে বললে আমরা হল প্রভোস্টকে জানাতে বাধ্য হই। স্যার আমাদের সকলের সাথে কথা বলতে টিভি রুমে আসেন। এসময় সে আসলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তার দিকে তেড়ে যায়। তবে তার গায়ে কেউ হাত তুলে নি।
ভুক্তভোগী আল ইমরান বলেন, যারা আমাকে মারধর করেছে তারা সবাই হলের ব্লকে থাকে এবং ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো। আমি কখনই কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম না। আমি কেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়েছি এবং ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলন করেছি সেই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে আজ। তারা অন্যায়ভাবে আমাকে মেরেছে আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অব্দুর সাত্তার জয় বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রবিউল/এমএ//