খুবি প্রতিনিধি :
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদপিণ্ড যেন তার গবেষণা। আর সেই হৃদয়ের স্পন্দনে যদি যুক্ত হয় নিষ্ঠা, উদ্ভাবন আর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ছোঁয়া, তবে সে তো কেবল একটি স্বীকৃতিই নয় পুরো প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনই চার আলোকবর্তিকা শিক্ষককে এবার দেওয়া হলো ২০২৪ সালের ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড যা শুধু সম্মান নয়, বরং নিঃশব্দে বলে দেয়, “তোমার কাজ সমাজের সীমা পেরিয়ে বিশ্বের দরবারেও কথা বলে।”
গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ভিন্ন স্কুলভুক্ত চার শিক্ষককে আজ ২৮ মে (বুধবার) দেওয়া হয়েছে ‘ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম।
তিনি প্রত্যেক গবেষককে তুলে দেন সনদ, মেডেল, ক্রেস্ট এবং ৫০ হাজার টাকার চেক।
অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলভুক্ত গণিত ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ হায়দার আলী বিশ্বাস; জীববিজ্ঞান স্কুলভুক্ত ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. অলোকেশ কুমার ঘোষ; সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলভুক্ত অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ নাসিফ আহসান এবং ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলভুক্ত হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রভাষক ইমতিয়াজ মাশরুর।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, “গবেষণা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। শিক্ষকরা এ প্রাণচর্চায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। যাঁরা আজ সম্মাননা পেলেন, তাঁদের গবেষণা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলো ফেলছে। এই অ্যাওয়ার্ড কেবল স্বীকৃতি নয়, এটি সকলের জন্য একটি প্রেরণার বাতিঘর।” তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণার মান আরও উন্নত করা সম্ভব। ভবিষ্যতে অনুষ্ঠানটি আরও বৃহৎ পরিসরে আয়োজন এবং তরুণ গবেষকদের জন্য ‘ইমার্জিং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তনের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন রিসার্চ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন তুহিন।
অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই সম্মাননা পাওয়ার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন আবেগভরা কণ্ঠে। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, শিক্ষকবৃন্দ এবং গর্বিত অভিভাবকরা।
গবেষণার পথে যাঁরা হাঁটেন, তাঁরা কেবল নতুন কিছু খুঁজে পান না তাঁরা গড়ে তোলেন ভবিষ্যৎ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চার আলোকবর্তিকার সম্মান যেন সেই ভবিষ্যতেরই রশ্মি হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আগামী প্রজন্মের গবেষকদের পথ দেখাক।