জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল দলের অংশগ্রহণে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবির প্রেক্ষিতে প্রকাশিত এক বিবৃতির মাধ্যমে প্রায় ত্রিশ বছর পর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর আগে ১৯৯৪ সালের ১৫ নভেম্বর ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিয়েছিল সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাত পৌনে বারটায়
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকী স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে শাখার সভাপতি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হারুনুর রশিদ রাফি ও সেক্রেটারি বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মহিবুর রহমান মুহিব এই দাবি জানিয়েছেন।
দাবি সম্বলিত এই বিবৃতিতে উল্লিখিত তিন ছাত্র শিবির কর্মীর পরিচয় উল্লেখ করা হলেও পুরো কমিটির তথ্য এখনো সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করেনি সংগঠনটি ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সর্বদা প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোন ধরনের দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনয়ন, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদ কেন্দ্রীক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিক ভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা আসলেও এরকম কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়’। কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারেনা। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধকরণ ও ট্যাগিং রাজনীতি মূলত ফ্যাসিবাদ কায়েমের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৫ বছরে ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের দরূন রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক। ছাত্ররাজনীতির এ যৌক্তিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।