জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজবুল ইসলাম সম্প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল নিয়ে ধরা পড়েন। তবে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। নকল নিয়ে ধরা পড়া সাজবুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকাতার হোসাইনের কাছের অনুসারী পরিচয়ে ক্যম্পাসে দাপিয়ে বেড়ান।
জানা যায়, গত ৩ মে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ‘সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন নকল করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ সময় হাতেনাতে নকল ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার হল পরিদর্শক সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন।
জানা যায়, এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিলো। এ সময় ‘সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কের্সের পরীক্ষায় হল পরিদর্শক ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন। পরীক্ষার হলে খাতার নিচে নকল কপি রেখে লিখছিলেন সাজবুল। দায়িত্বরত শিক্ষক ছালেহ উদ্দীন তা দেখা মাত্র খাতা নিয়ে নেন। কিন্তু সেই ছাত্রলীগ নেতা সাজবুলের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, যদি কোনো বিভাগে নকলের ঘটনা ঘটে, তাহলে প্রথমে নকলের প্রমাণনসহ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে সবকিছু যাচাই করার পর তা শৃঙ্খলা উপ-কমিটির কাছে পাঠানো হয়। শৃঙ্খলা উপ-কমিটিতে সবকিছু পর্যালোচনার পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর জন্য শাস্তি সুপারিশ করে শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সবশেষে শৃঙ্খলা কমিটিতে শাস্তিদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক হলেন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ এবং অন্য সদস্যরা হলেন- কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পরীক্ষা নিযন্ত্রক জহুরুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীর কাছে নকল শনাক্ত করা পরীক্ষার হল পরিদর্শক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন বলেন, নকলের দায়ে অভিযুক্ত কোন শিক্ষার্থীর খাতা বাতিল করা ও শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। পরীক্ষার হলে তাকে নকল করা অবস্থায় দেখা মাত্রই তার খাতা নিয়ে ফেলি আমি। পরে সেই খাতা পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে ওই সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন ধরণের কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। অফিস চলাকালে তার সাথে দেখা করতে বলেন তিনি। তবে তাঁর অফিসে একাধিকবার যাওয়ার পরেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জহুরুল ইসলাম বলেন, বিভাগ থেকে যদি কোন শিক্ষার্থীর নকলের বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ আকারে না পাঠানো হয়, তাহলে এতে আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে আমাদের কোন দোষ নেই, বিভাগের দোষ।