অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষকবৃন্দ ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) টানা তৃতীয় দিনের কর্মসূচিতে শিক্ষকগণ প্রত্যয় স্কীমের বিরোধিতা করে ক্যাম্পাসের একাডেমিক বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে সমবেত হয়। বুটেক্স শিক্ষক সমিতির সমিতির পূর্ব নির্দেশনা মোতাবেক অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। এতে বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য সকল সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচিতে ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো: জুলহাস উদ্দিন বলেন, প্রত্যয় স্কীমে বিদ্যমান বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থার সাথে প্রস্তাবিত পেনশন স্কিম বেশ অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং প্রত্যয় স্কিমে সুযোগ-সুবিধা অনেক কম। শিক্ষকতা পেশাকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যেখানে আকর্ষণীয় করার কথা, সেখানে বরং এই ধরনের স্কিম প্রস্তাবনার মাধ্যমে এই পেশাকে অনাকর্ষণীয় করা হচ্ছে। নিকট ভবিষ্যতে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশাকে তাদের পছন্দের শীর্ষে রাখবেন না। এতে করে একসময় দেশের উচ্চশিক্ষায় এক মেধাশূণ্যতার সৃষ্টি হবে।’
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রত্যয় স্কীম গৃহীত হলে শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদার চরম অবনমন হবে। এমনকি যারা উচ্চশিক্ষায় ডিগ্রী অর্জন করতে বিদেশে যান, তাদের মধ্যে যেমন স্বদেশমুখী হওয়ার প্রবণতা কমবে, একইভাবে যারা দেশকে ও বিশ্ববিদ্যালয়কে সেবা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন লোভনীয় চাকরি ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন, তাদের স্বার্থের সাথেও ন্যায় বিচার করা হবে না।’
বুটেক্স শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো: সাইদুজ্জামান আরও যোগ করে বলেন, একটি কুচক্রী মহল দেশের স্থিতিশীল অবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নয়ন কার্যক্রমকে রুখে দেয়ার উদ্দেশ্যে বৈষম্যমূলক প্রত্যয় স্কীমের নামে সরকারকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিত সম্মুখীন করতে চাচ্ছে, যা শিক্ষকসমাজ কখনোই মেনে নিবে না।
এছাড়া শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: রিয়াজুল ইসলাম উপস্থিত সকল শিক্ষকবৃন্দকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রত্যয় স্কীমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ও তীব্র কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। একই সাথে তিনি আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের দায়িত্বশীল মহলের সাথে বারবার যোগাযোগ করার পরেও কোন প্রকার জবাব না আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জুন সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় বুটেক্সের শিক্ষকবৃন্দও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন।