বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন কার্যক্রমে শিক্ষক সমিতি অংশগ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সেই সূত্রে ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের সাথে র্যালি কিংবা পুষ্পস্তবক অর্পণে দেখা যায়নি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দদের।
রবিবার (১৭ই মার্চ) সকাল ১১টার দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) পরিবারের পক্ষ থেকে একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালি শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। তবে এতে অংশগ্রহণ করেনি কুবি শিক্ষক সমিতির সদস্যরা।
গত ২রা মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতির দাবি মানা না হলে ১৭ ও ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে আলাদা ফুল দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের লক্ষ্যে শহীদ মিনার, হলসমূহ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান করা হয়নি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে, অনুক্রম লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, হলসমূহ, বিভাগসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনের আগে বহিস্থ একটি দপ্তরকে পুষ্পস্তবক অর্পণের নাম ঘোষণা করে। ফলে, উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য সহ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকলের মনে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, ১৭ই মার্চ এবং ২৬শে মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষে গত ২৮ই ফেব্রুয়ারি একটি কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটিতে পূর্বের সেই মিজানুর রহমানকে আহবায়ক রাখা হয়। তাকে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দিবসের উদযাপনের কমিটির দায়িত্ব দেওয়াকে শিক্ষক সমিতি কাণ্ডজ্ঞানহীন মনে করে। তাছাড়া উপাচার্য দপ্তরে শিক্ষকদের উপর হামলায় জড়িত জাকির হোসাইনকে উক্ত কমিটিতে রাখা হয়েছে। উক্ত হামলায় মদদকারী কাজী ওমর সিদ্দিকী রানাকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে।
এছাড়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিতর্কিত এই তিন ব্যক্তিকে উক্ত কমিটি থেকে প্রত্যাহার করে না নিলে কুবি শিক্ষক সমিতি ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস এবং ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস-২০২৪ যথাযোগ্য মর্যাদায় আলাদাভাবে পালন করবে।
এ ব্যাপারে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন একটা অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছে, শিক্ষকদের যে যৌক্তিক দাবি-দাওয়া কোনোটিই মানছে না, তারা শিক্ষকদের উপর নির্যাতন করছে তাই প্রশাসনের কোনো কর্মসূচীর সাথে শিক্ষক সমিতি অংশগ্রহণ করছে না। শিক্ষক সমিতি আলাদাভাবে ফুল দিয়েছে এবং বিকালে এতিম-দুস্থদের মাঝে ইফতার এবং দোয়া মাহফিল হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে।’
এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা শিক্ষক সমিতি আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছি। আমরা ৭ই মার্চও আলাদাভাবে আলোচনা করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েছি এবং বিকেলে গরীব অসহায়দের মাঝে ইফতার বিতরণসহ বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছি।’