জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনো মাথা নত করেতে শিখেনি। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তার ওপর কতবার যে বোমা হামলা হয়েছে তার হিসাব নেই। ২১ শে আগস্ট তার উপর চরম পর্যায়ে হামলা হয়েছিল। এতে আইভী আপার মতো একজন ত্যাগী নেত্রীকে আমরা হারিয়েছি। সেদিন আমরা প্রায় আমাদের নেত্রীকে (প্রধানমন্ত্রী) হারাতে বসেছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি।
আজ রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সাদেকা হালিম বলেন, বাংলাদেশ শুধুমাত্র একটি রাষ্ট্র নয়। বাংলাদেশ এখন শক্তিশালী ভূরাজনৈতিক একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। ভূরাজনীতির কারণে বাংলাদেশ ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, আবার চীনের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। তেমনই আমেরিকার কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকা আমাদের দেশের সেন্টমার্টিন চেয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মাথা নত করেন নি। তার নেতৃত্বে সফল নির্বাচনের পর বাইডেন সাহেবও আমাদের নির্বাচনের স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে যেমন তার বেড়ে ওঠা, রাজনৈতিক দিক উঠে এসেছে। তেমনই তার ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা ফুটে উঠেছে। জাতির পিতা জানতেন কাকে কিভাবে সম্মানিত করতে হয়। বঙ্গবন্ধু সংবিধানে চারটি স্তম্ভের কথা বলেছেন। তার মধ্যে তিনি সমাজতন্ত্রের কথা বলেছে। সমাজতন্ত্র বলতে তিনি সকলকে সমান হিসেবে দেখেছেন। তার জীবনী থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা শিক্ষা নিতে পারে। বঙ্গবন্ধু যেমন মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের স্বাধীন দেশে বীরাঙ্গনা সম্মাননা দিয়েছেন। তেমন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা সবসময় মেয়েদের সম্মান করবে।
জবি উপাচার্য বলেন, আমি কখনো সিকিউরিটি নিয়ে চলি না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার সন্তান। তারাই আমাকে দেখে রাখবে। খুব শিঘ্রই আমরা ডিনস অ্যাওয়ার্ড দিব। আমি ট্রেজারার মহাদয়কে বলেছি প্রত্যেক বিভাগ থেকে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা করতে। তাদের বৃত্তি দেয়ার ব্যবস্থা করব। এছাড়া ক্যান্টিনের খাবারের মান বৃদ্ধিতে কাজ করব। এতো শিক্ষার্থী যখন ৭ একরের ছোট ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায় তখন আমাদের খারাপ লাগে। তারা খোলা মাঠে খেলাধুলা করবে, আড্ডা দিবে। কিন্তু সেটা এখানে হয় না। এরজন্য আমরা নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছি। সবার আগে যেন দ্রুত শিক্ষার্থী হল করা যায় সেটার উপর নজর দিব।
অনুষ্ঠানে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এখনো সক্রিয়। এগুলো প্রতিহত করতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের যে ঘটনা যদিও বিচ্ছিন্ন, তবুও তা কাঙ্ক্ষিত নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা যখন তার জুনিয়র এক ছোট ভাইয়ের গায়ে হাত দেয় তখন আমরা বিব্রত হই। ছাত্রলীগের যারা আছে তাদের উদ্দেশ্যে বলব আমরা যেন জ্ঞান দ্বারা পরিচালিত হই।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, কিছুদিন আগে বাংলাদেশে নির্বাচন হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো এ নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। বর্তমানে পাকিস্তানে নির্বাচন হচ্ছে, অথচ পশ্চিমা দেশগুলো কথা বলে না। বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে যে ন্যায্য হিস্যা পাবে তা নিয়েও কথা বলে না।
এছাড়া অনুষ্ঠানে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী।
মো. জুনায়েদ শেখ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়