রাজনৈতিক দলগুলো যদি বড় ধরনের সংস্কার দাবি না করে, তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তবে বেশি সংস্কার প্রয়োজন হলে নির্বাচন ছয় মাস পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতিমধ্যে একটি রোডম্যাপ দিয়েছে, যা জনগণের মধ্যে প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “যদি বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন না হয়, তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই হবে। আর যদি রাজনৈতিক দলগুলো বড় ধরনের পরিবর্তন চায়, তবে ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগবে।”
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ নিয়ে চিন্তা করছে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে। বর্তমানে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলারে, যেখানে আগে এটি ২০ বিলিয়ন হওয়ার কথা ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িতদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। একই সঙ্গে লুটপাট ও দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “গত পাঁচ মাসে আমরা অনেক অর্জন করেছি। যে অবস্থায় শুরু করেছিলাম—একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ভঙ্গুর সমাজব্যবস্থা থেকে আমরা দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে এসেছি। ভবিষ্যতে এ অর্জনের মূল্যায়ন হবে।”
তিনি বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দ্রব্যমূল্য কমেছে, সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে এবং জটিল পরিস্থিতি সমাধান হয়েছে।”
আইনশৃঙ্খলার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো। “আমরা অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি এবং রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, আগামীতে দেশের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার কাঠামো নিয়ে গভীর আলোচনা প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণে কী ধরনের সংস্কার দরকার, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন গত ১৫ বছরে দেশে ‘রাজতন্ত্রের’ মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না।” তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থের অপচয়ের অভিযোগও তোলেন।