রাবি প্রতিনিধি: রাজধানীর মিডফোর্ডে যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিবাদও জানান তারা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সমাবেশে দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এর আগে প্যারিস রোড থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় তারা ‘রাস্তাঘাটে মানুষ মারে ইন্টেরিম কী করে’, ‘এক দুই তিন চার, চাঁদাবাজ দেশ ছাড়’, ‘রক্তে ভেজা আমার ভাই খুনি তর রেহায় নাই’, ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘লীগ গেছে পথে, দল যাবে সেই পথে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন , জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে বাংলাদেশ নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছে। আর এগুলো করেছে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো।
তিনি যোগ করেন, এখন থেকে আমাদের হামলাকারী ও হত্যাকারীদের দল ধরে সমালোচনা করতে হবে। তা করতে না পারলে তারা আবার হাসিনা হয়ে উঠতে চাইবে।
সজীব হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জুলাই যতদিন বেঁচে থাকবে, আমরা ততদিন এই বাংলাদেশে কোনো আওয়ামী লীগ গঠন হতে দেবো না। বিএনপি, জামায়াত কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলই হোক, সন্ত্রাসবাদ কায়েম হতে দেওয়া হবে না।
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যদি জনগণের চাওয়া ধারণ করতে না পারেন বা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন, তবে গদি ছেড়ে চলে যান। বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কে নেতৃত্ব দেবে।
আরেক সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, ক্যাম্পাস গুলোতে লেজুরবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি থাকলেও আমরা তা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা যেভাবে আওয়াজ উঠানোর ছিলো সেভাবে করতে পারিনি। যার ফলে এই ১২ মাসে একটি দল খুনের সেঞ্চুরি করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত আমলেও আমাদের আওয়াজ নিচু করে রাখতে রাখতে ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী হাসিনা তৈরি করেছি। আর আমাদের নিচু হওয়া যাবেনা।
তিনি বলেন, যেভাবে ঢাকার ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে ঠিক সেভাবেই হত্যা হত্যাকারীকে প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে। আমরা আর বিচার নিয়ে তালবাহানা দেখতে চাই না। অবিলম্বে এই হত্যাকান্ডের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার দলের যেসব সন্ত্রাসীরা খুন ও চাঁদাবাজি করছে সেগুলো ঠেকাতে না পারেন, নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাদের বিরুদ্ধে যদি মামলা না করেন তাহলে আমরা ধরে নেব এই পথে আপনার সমর্থন আছে।
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, আপনি কিসের ভয় এখনো দেশে আসছেন না। দেশে আসার সাহস কেন পাচ্ছেন না। আপনাকে এই সমস্ত খুনের দায় নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর মিডফোর্ডে যুবদল নেতা কর্তৃক চাঁদা না দেওয়ায় সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তার লাশের উপর লাফানোর একটি ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত হয়।