রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা একটি মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পারভেজ মিয়া হত্যার অভিযোগে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ চারজনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
রিমান্ডের নির্দেশ পাওয়ার পর পলককে যখন হাতকড়া, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “ভয় দেখিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে জয় করতে হয়।” কিন্তু কার উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি নীরব থাকেন। তার পাশে থাকা আইনজীবীরা বলেন, “কারা ভয় ছড়াচ্ছে, তা তো আপনারাই দেখছেন।”
কারাগারে তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে পলক শুধু হাসেন।
তার আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি জানান, পলকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় মোট ৬০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে, যার মধ্যে এখনো ২৪ দিন বাকি রয়েছে। এর আগেও যাত্রাবাড়ী থানার একটি মামলায় রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই তারা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করে প্রয়োজনে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তাব দেন। তবে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনেরও রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। তাদেরকেও আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় শমসের মবিন চৌধুরী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত উঁচু করে বলেন, “এই দেখুন, মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত আসামির হাতে হাতকড়া!” কিছুক্ষণ পর আবার বলেন, “একজন খেতাবপ্রাপ্ত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার হাতে হাতকড়া পরানো হয়েছে, কেন?” এরপর তিনি চুপচাপ হাজতখানার দিকে এগিয়ে যান।
সোমবার সকালে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করে তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক নাজমুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন, আর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।