হঠাৎ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশ—ফিলিপাইন এবং আফগানিস্তান। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে উভয় দেশে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্প দুটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬ (রিখটার স্কেলে)। তবে, এতে সৌভাগ্যক্রমে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। খবর এএফপি ও আনাদোলু।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মিন্দানাও দ্বীপের উপকূলে স্থানীয় সময় সকালে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল প্রায় ৩০ কিলোমিটার, যা অপেক্ষাকৃত মাঝারি গভীরতার একটি কম্পন বলে ধরা হয়।
ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মাইতুম শহর থেকে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে।
স্থানীয় অগ্নিনির্বাপণ কর্মকর্তা গিলবার্ট রোলিফোর জানান, ভূমিকম্পটি তীব্র ছিল বটে, কিন্তু খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা এখনো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং এখনো পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর আমাদের কাছে নেই।”
অন্যদিকে, একই দিনে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলেও শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (EMSC) জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২১ কিলোমিটার গভীরে এবং কেন্দ্রস্থল ছিল বাঘলান শহর থেকে ১৬৪ কিলোমিটার পূর্বে।
প্রথম দিকে সংস্থাটি ভূমিকম্পটির মাত্রা ৬ দশমিক ৪ বলে জানালেও পরে তা সংশোধন করে ৫ দশমিক ৬ করে। এই ভূমিকম্পেও এখনো পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি কিংবা বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এবং দেশটি বিগত তিন দশকে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ভয়াবহ ভূকম্পনের সম্মুখীন হয়েছে। শুধুমাত্র ভূমিকম্পজনিত কারণে দেশটিতে বিগত বছরগুলোতে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ অঞ্চলটি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং অতীতেও একাধিক প্রাণঘাতী ভূমিকম্প সেখানে সংঘটিত হয়েছে।
ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে ফিলিপাইনও। এটি “রিং অব ফায়ার” নামে পরিচিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অংশ, যেখানে প্রায়ই টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘাতে ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।
সবশেষ তথ্য মোতাবেক, দুই দেশের কর্তৃপক্ষই সতর্ক রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় উদ্ধার ও জরুরি প্রস্তুতি ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর আছে। ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পনের বা আফটার-শকের আশঙ্কায় মানুষজন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।