মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, শিশুটির জীবন বাঁচাতে সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মৃত্যুর আগে সকালে শিশুটির হৃদযন্ত্র তিনবার বন্ধ হয়ে যায়, দুইবার স্বাভাবিক করা গেলেও তৃতীয়বার আর সচল করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি শিশুটির আত্মার শান্তি কামনা করেছে।
গত ৫ মার্চ রাতে মাগুরা পৌর এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পরদিন তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।
শিশুটির মা এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন, যেখানে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। পুলিশ চারজনকেই গ্রেপ্তার করেছে।
এই নির্মম ঘটনার প্রতিবাদে মাগুরায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহরের রাস্তায় নেমে আসে এবং আদালতের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারীদের অন্যতম সংগঠক সাদিয়া ইয়াসমিন বলেন, “আমরা চাই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হোক, নয়তো তারা শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারে।”
বিক্ষোভের কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের রিমান্ড আবেদন করতে পারেননি। তবে তিনি জানান, সাত দিনের রিমান্ড আবেদন প্রস্তুত ছিল, কিন্তু আদালত বসতে না পারায় তা দাখিল করা সম্ভব হয়নি।
বেলা ১টার পর সেনাবাহিনীর একটি দল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে। পরে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শহরের প্রধান মোড়ে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা, যার ফলে ঢাকা-খুলনা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।