জনপ্রিয় গায়ক ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। ১১ বছর ধরে ক্যানসারের সাথে লড়াই করছিলেন জুয়েল। দেশে এবং বিদেশে তাঁর চিকিৎসা চলছিল, তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। জুয়েলের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী, উপস্থাপক সংগীতা আহমেদ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
জুয়েল ১৯৬৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন। ২০১১ সালে তাঁর লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে এবং পরে ফুসফুস ও হাড়েও ক্যানসার সংক্রমিত হয়। এরপর থেকে তাঁর চিকিৎসা চলছিল এবং গত অক্টোবর থেকে তাঁকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় এবং আজ চিরবিদায় নেন।
জুয়েলের সংগীত জীবন শুরু হয়েছিল শিশু বয়সেই। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রতিবেশী এক ব্যক্তির কাছে গান শিখেছিলেন এবং চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় মঞ্চে প্রথম গান করেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কেন্দ্রিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৯৩ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ‘এক বিকেলে’ (১৯৯৪), ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭) সহ আরও অনেক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।
২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় দুটি একক গান নিয়ে অ্যালবাম ‘তাতে কি বা আসে যায়’ এবং ‘এই সবুজের ধানক্ষেত’। তাঁর ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয় এবং এর জন্য তাঁকে ‘এক বিকেলের জুয়েল’ হিসেবে পরিচিতি লাভ হয়। সংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন যে, গান করার সময় আর্থিক সমস্যা এড়াতে তিনি আরেকটি পেশা গ্রহণ করেছিলেন।