জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে নারীদের গৌরবময় ভূমিকা ও আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণমূলক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জুলাই বীরগাথা বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মাহফিলসহ নানা আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) “জুলাই শহীদ দিবস” পালন করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টায় জুলাই মাসের ৩৬ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানসূচীর সাথে সঙ্গতি রেখে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে শুরু হয়। এরপরে যবিপ্রবির জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একাডেমিক ভবনের অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হোসেন গ্যালারীতে শুরু হয় “জুলাই শহীদ দিবস” উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠান। আলোচনা অনুষ্ঠানে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ ও জুলাই বিপ্লবের শহীদ আব্দুল্লাহ’র পরিবারের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
যবিপ্রবি উপাচার্য জুলাই শহীদ দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই বিপ্লব পর্যন্ত সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা অসুস্থ আছে তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। তিনি আরও বলেন আমি নিজেই একজন জুলাই বিপ্লবে সম্মুখ যোদ্ধা ছিলাম। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর জুলুম নির্যাতন দেখে এর প্রতিবাদ করায়, আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু আমি দমে যায়নি। কারণ আমি থেমে গেলে আমি অন্যায়কারী হতাম। দেশের সকল পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও ুেপশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। শিশুসহ সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। এতো ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এতো রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে দেশ পেয়েছি এই দেশ যদি আমরা বিনির্মাণ করতে না পারি এটা আমাদের ব্যার্থতা হবে। স্বৈরাচারকে হটিয়ে আমরা যে দেশ পেয়েছি, এই দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ সকল শহীদদের সাহসে আমরা বলীয়ান হয়ে একটি বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তোলাই হবে আমাদের অঙ্গীকার।
আলোচনা সভা শেষে যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও যারা অসুস্থ রয়েছে সেসকল বীরদের আশু সুস্থতা কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও যবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ৩৬ দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান থাকবে।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন যবিপ্রবির জুলাই বিপ্লব উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন। অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবের তাৎপর্য তুলে ধরে আরও বক্তব্য রাখেন জুলাই বিপ্লব উদ্যাপন কমিটির সদস্য-সচিব ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. রাফিউল হাসান, শহীদ আব্দুল্লাহ’র বড় ভাই মো. জাহাঙ্গীর আলম, পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন, আইপিই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সামিউল আজিম, গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সুমন আলী, এফই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তপু ইসলাম, জিইবিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল আলিম সামি, কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির খন্দকার। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং প্রভাষক মো. শাহানুর রহমান শুভ।