রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২৫ সেশনে ভর্তি পরীক্ষা দেশের পাঁচ বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তিচ্ছুদের সুবিধার জন্য আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু করলেও, বাস্তবে সেটাই প্রহসনে পরিণত হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের কষ্ট কমানো, কিন্তু বাস্তবে সেটাই আরও বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।
পরীক্ষায় অংশ নিতে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা এখন রাজশাহী গিয়ে পরীক্ষা দেবে, রংপুরের শিক্ষার্থীদের যেতে হবে খুলনা।
শাহিন লাষ্কর নামের এক শিক্ষার্থী বলেছেন, খুলনা বিভাগের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সিট পেয়েছে চট্টগ্রামে, রংপুর ও রাজশাহীর ভর্তিচ্ছুও পেয়েছে চট্টগ্রামে। তাহলে ভোগান্তি তো দ্বিগুণ হলো। তাহলে বিকেন্দ্রীকরণ করে সুবিধা কী হলো, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্য বিভাগে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হলে বিকেন্দ্রীকরণের কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। এটা তো আরও বেশি ভোগান্তি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম জানান, ভর্তি কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত অনুসারে শুধুমাত্র বিভাগীয় শহরের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে।
এক্ষেত্রে সমস্যা যেটা হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়ার আসন কম, সেখানে বেশি আবেদন করেছে। আবার যেখানে সিট বেশি সেখানে কম আবেদন করেছে। তাই মেরিট অনুসারে সিট প্ল্যান করা হয়েছে। ফলে এই সমস্যা হয়েছে।
তাছাড়া এক শিফটে পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া খুবই কঠিন। পরবর্তীতে বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হবে।
আইসিটি সেন্টারের তথ্য মতে, এবছর এ, বি, সি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘এ’ ইউনিটে ৯৬ হাজার ১৬২, ‘বি’ ইউনিটে ৪২ হাজার ৪৩৩, ‘সি’ ইউনিটে ৯৮ হাজার ৮২০ জন চূড়ান্ত আবেদন করেছে। তবে অভিন্ন পরীক্ষার্থী সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৯৪ জন। পাঁচ বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে ৮টি। এদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ হাজার ৭০০টি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রণী স্কুলে শুধু ‘সি’ ইউনিটের জন্য অতিরিক্ত আসন ১ হাজার ৮০৮টি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ২৬৩টি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৫০টি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ৮০টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ হাজার ২০০টি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৪১৯টি ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ হাজার ৩০০টি পরীক্ষা নেওয়ার আসন রয়েছে।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্টে লিখেন, দিন শেষে বিকেন্দ্রীকরণ করে কি লাভ হলো ঢাকা আর চট্রগ্রাম অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের? আর চরম ভোগান্তির শিকার হলো রাজশাহী, খুলনা আর রংপুর অঞ্চলের একটি বড় অংশের শিক্ষার্থীদের। এবারের জন্য দুঃখ প্রকাশ ছাড়া উপায় দেখছিনা তবে ভবিষ্যতে উপায় বের করতেই হবে।
দীন ইসলাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়