আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে গুমের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় নাম থাকা অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান।
শুনানির সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের সংস্কৃতি চালু করে। তিনি বলেন, “গুমে জড়িতদের পুরস্কৃত করা হতো, যেখানে র্যাব, ডিবি, সিটিটিসি, এবং ডিজিএফআই সবচেয়ে বেশি যুক্ত ছিল।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে হাজার হাজার মানুষকে গুম ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। অনেকেই সাদা পোশাক বা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে তুলে নেওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। কেউ কেউ ফিরে এলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, আবার কেউ স্বৈরশাসনের অবসানের পর ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
আদালত আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেপ্তারের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা এবং ২৫ সেপ্টেম্বর এক আইনজীবী সোহেল রানা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ করেন।