সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(রাবিপ্রবি) ২৩ ও ২৪ এপ্রিল দুইদিনব্যাপী উদযাপিত হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার প্রধান উৎসব বৈসাবি।
২৩ এপ্রিল(সোমবার) সকাল ১১ ঘটিকায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বৈসাবি উৎসব উদযাপন শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.সেলিনা আখতার ফিতা কেটে বিজু, বিহু, বিষু,বৈসু,সাংগ্রাই উৎসবের উদ্বোধন করেন।
এসময় উপাচার্য বলেন,
“আমরা এই পাহাড়ের সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠবো, এরকম পাহাড় লেকের মেলবন্ধনের সাথে এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি হয়তো পৃথিবীর আর কোথায় নেই।”
এছাড়াও আয়োজিত খেলাধুলাসহ সকল উৎসব সুন্দরভাবে উপভোগ করার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন এবং সকলকে বৈসাবি উৎসবের শুভেচ্ছা জানান।
তারপর পর্যায়ক্রমে হাড়িভাঙ্গা, রশি খেলা, পানি খেলাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
রাবিপ্রবির শিক্ষার্থী উষ্ণীষ দেওয়ান আমাদেরকে জানান “প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও রাবিপ্রবির ক্যাম্পাসে বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন খেলাধুলা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসব আমাদের সকল জাতিগোষ্ঠীকে একত্রিত করে আমাদের বন্ধন অটুট রাখে।”
দুইদিনব্যাপী উদযাপিত উৎসবের দ্বিতীয় দিনে (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হয় স্টল প্রদর্শনী। স্টল প্রদর্শনীতে বিভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থীরা তাদের স্টলে বিভিন্ন রকমের ঐতিহ্যবাহী পিঠা ও খাবার পরিবেশন করেন।
স্টল প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করা রাবিপ্রবির শিক্ষার্থী ক্যাহলাচিং চৌধুরী আমাদের জানান,”আমরা আমাদের স্টলে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো পরিবেশন করেছি। যেমন পইংজ্জ্রা, ফাসং, চিহ্লমঃ(বড়া পিঠা), নুডলস ও বিভিন্ন রকমের পিঠা।”
স্টল প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করা আরেক শিক্ষার্থী লোরা চাকমা জানান, “আমাদের স্টলে আমরা চাকমা ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন, হুকা পিঠা, মটর বিরিয়ানি, পাজন ও মমোস পরিবেশন করেছি।”
দুইদিনব্যাপী আয়োজিত উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিলো সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে গতদিনের বিভিন্ন ধরণের খেলাধূলায় অংশগ্রহণকারী চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ প্রতিযোগীদের পুরষ্কার তুলে দেয়া হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার পরিচয়মূলক র্যাম্প শো, তাদের নিজস্ব ভাষার গান ও নাচ, একক ও যৌথ নানান পরিবেশনা।
সবশেষে রাঙ্গামাটির জনপ্রিয় দুইটি ব্যান্ডদল ইনভোকেশন ও লারেহ এর গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও কনসার্ট আয়োজন।