সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষকবৃন্দ।
রোববার (২৬ মে) সকাল ১১ টায় কৃষি অনুষদের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় তাঁরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়নের দাবি জানান। দাবি আদায়ে শিক্ষক ফেডারেশনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সকল কর্মসূচি পালন করবেন বলে হুশিয়ারি দেন।
মানববন্ধনে শেকৃবির সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বেগ বলেন, আমরা এর আগেও স্বতন্ত্র পে স্কেলের আবেদন করেছি যা কার্যকর হয়নি। আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫। এই স্কীমের অধীনে আসলে তা আবার ৬০ হয়ে যাবে কিনা। আবার এখানে বলা হয়েছে, ৭৫ বছরের বেশি বয়স্ক হলে টাকা পাবে না। কিন্তু এখন তো গড় আয়ু বেড়েছে। মানুষ আরো বেশি বাঁচে। তাহলে সে ক্ষেত্রে কি হবে৷ এখন শিক্ষকরা কি নিজেদের একাডেমিক মান উন্নয়ন করবে নাকি তাদের বেঁচে থাকার লড়াই করবে। তাহলে দেখা যাবে, মেধাবীরা আর শিক্ষকতায় আসবে না। দেশের বাইরে চলে যাবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলা মেধাহীন হয়ে পড়বে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কেও বা কারা চক্রান্ত করে মেরুদন্ড ভেংগে দিতে চাইছে, এ বারই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন চক্রান্ত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যারা ঘিরে রাখেন তারা তাকে ভুল বুঝিয়েছেন৷ আবারো এই চক্রান্ত চলছে। আমরা বৈষম্যের শিকার। যতদিন দাবি পূরণ না হবে ততদিন শিক্ষক ফেডারেশনের কার্যক্রমের সাথে আছি আমরা।
শেকৃবির পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিন ড. আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্যে বলেন, “একটি কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ। যখন সকল সরকারি কর্মকর্তা, আমলা সকলের জন্য একই নিয়ম যখন করবে তখন আমাদের জন্যও করলে আপত্তি থাকবে না। ”
শেকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড.মো. মিজানুর রহমান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ হারাবেন। এখানে শিক্ষকেরা পদোন্নতি পান নতুন একটি নিয়োগের মাধ্যমে। ফলে দেখা যাবে, পদোন্নতি পাওয়ার পর বর্তমান শিক্ষকেরাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পড়বেন। তাই অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক স্কিমের আওতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুক্ত রাখতে হবে।