আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং এমপিসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) দুদকের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
এর আগে, গতকাল রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন দুদকের চেয়ারম্যানের কাছে একটি তালিকা ও সম্পদ বৃদ্ধির পরিসংখ্যান জমা দিয়ে অনুসন্ধানের আবেদন করেন।
দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন এ প্রসঙ্গে বলেন, “কমিশনে অভিযোগ জমা পড়লে তা কমিশনের বিধি অনুযায়ী তদন্ত করা হবে, এটি কমিশনের নৈমিত্তিক কার্যক্রমের অংশ।” এই মন্তব্যের পরদিনই সংস্থাটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ থাকা রাজনৈতিক নেতাদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, নানা কারণে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা তাতে আর অগ্রসর হয়নি। তবে এবার নতুনভাবে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেনের আবেদনে যেসব সাবেক মন্ত্রীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন টিপু মুনশি, নসরুল হামিদ, সাধন চন্দ্র মজুমদার, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, ডা. এনামুর রহমান, তাজুল ইসলাম, জাহিদ মালেক, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, হাসানুল হক ইনু, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুল হক, গোলাম দস্তগীর গাজী, ইমরান আহমদ, জাকির হোসেন, কামাল আহমেদ মজুমদার, জাহিদ আহসান রাসেল, নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শাহজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, হাছান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম, এবং মহিবুর রহমান।
তালিকাভুক্ত সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে আছেন বেনজীর আহমেদ (ঢাকা-২০), সরওয়ার জাহান (কুষ্টিয়া-১), শরিফুল ইসলাম জিন্না (বগুড়া-২), শহিদুল ইসলাম বকুল (নাটোর-১), শেখ আফিল উদ্দিন (যশোর-১), ছলিম উদ্দিন তরফদার (নওগাঁ-৩), কাজী নাবিল আহমেদ (যশোর-৩), এনামুল হক (রাজশাহী-৪), মামুনুর রশিদ কিরন (নোয়াখালী ৩), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর-৫), কাজিম উদ্দিন আহমেদ (ময়মনসিংহ-১১), স্বপন ভট্টাচার্য (যশোর-৫), আ.স.ম. ফিরোজ (পটুয়াখালী-২), নূরে আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১), আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন (জয়পুরহাট-২), শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১), এবং জিয়াউল রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২)।
এই পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৫ বছরে মন্ত্রী ও এমপিদের মধ্যে কারও আয় এবং সম্পদের পরিমাণ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বেড়েছে। কারও ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি ১০০ গুণ থেকে শুরু করে কয়েক হাজার গুণ, এমনকি লাখ গুণ পর্যন্তও পৌঁছেছে।
এমএ//