বিশেষ প্রতিনিধি: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বৈষমঢ়বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে নির্বাচন ভবনে শুরু হওয়া এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন এবং তাজনূভা জাবীন।
সূত্র মতে, বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। এর মধ্যে রয়েছে—নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন, দলীয় নিবন্ধনের সময়সীমা নির্ধারণ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি।
এর আগে বৈঠকের আগের রাতে অর্থাৎ শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীনের স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর কয়েক মাসের মাথায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন বন্দোবস্তের গোড়াপত্তন করতে গড়ে তোলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামের এই নতুন রাজনৈতিক দল। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে এই এনসিপি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাষ্ট্রীয় মৌলিক কাঠামোর সংস্কার, রাজনৈতিক ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর এবং কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে দলটি। দলটির মতে, বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা জরুরি।
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও স্বচ্ছ রাখতে কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে দলটি।
এনসিপির এই বৈঠককে সাধারণ আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে না দেখে এটিকে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কমিশনের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কৌশল হিসেবেও বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অভিমত তাঁদের।
তারা আরও মনে করেন, এমন বৈঠকগুলি শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।