বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ প্রসঙ্গ নিয়ে সম্প্রতি অস্পষ্টতা সামনে এসেছে। কারণ বিদ্যমান আইনে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ নেই, কে বা কারা শপথ পাঠ করাবেন।
তবে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা সরকারের মনোনীত কোনো ব্যক্তির সামনে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও সময়ের মধ্যে শপথ গ্রহণ করবেন এবং শপথপত্রে স্বাক্ষর করবেন।
আইন অনুসারে, গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে সরকার মনোনীত ব্যক্তি দ্বারা শপথ গ্রহণের আয়োজন করার কথা রয়েছে। তবে ওই “মনোনীত ব্যক্তি” কে হবেন, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এ বিষয়ে সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান জানিয়েছেন, সরকার যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তিকে এই দায়িত্ব দিতে পারে। সেটি হতে পারেন সচিব, উপদেষ্টা, কিংবা প্রয়োজনে সরকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও।
বাস্তবে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়রদের শপথ সাধারণত প্রধানমন্ত্রী পড়িয়ে থাকেন, যদিও তা আইনগত বাধ্যবাধকতার অংশ নয়। কাউন্সিলরদের শপথ পড়ানোর দায়িত্ব পালন করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
অন্যদিকে, বিগত বছরগুলোতে পৌরসভার মেয়রদের বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক এবং ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের শপথ পড়াতে দেখা গেছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রটোকল অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বড় শহরের মেয়রদের শপথ পড়িয়েছেন, এমন নজির রয়েছে। এর বিপরীতে, ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে চট্টগ্রামের মেয়রের শপথ পড়িয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
সিটি করপোরেশনের মেয়রদের প্রটোকল অনুসারে অবস্থান ১৮তম, যেখানে সচিবদের অবস্থান ১৬তম। ফলে সরকারের পক্ষে সচিবকে এই দায়িত্ব অর্পণ করা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।
তুলনামূলকভাবে, সাংবিধানিক পদ যেমন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান বিচারপতির ক্ষেত্রে সংবিধানে কে শপথ পড়াবেন, তা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত। কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন থেকে গেছে। যা নানা সময়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়ে আসছে।