ডিক্সন হ্যান্ডশো হাতশা জীবনের বেশিরভাগ সময় নিজেকে এক হতভাগ্য মানুষ মনে করতেন। জন্মের পরপরই তাকে দত্তক নেয়া হয়েছিল, তবে আসল বাবা-মা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কিন্তু সম্প্রতি ৭৫ বছর বয়সী ডিক্সন জানতে পারেন, তার বেশ কয়েকজন ভাইবোন রয়েছে। বড়দিনের আগেই তিনি তাদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা করেছেন।
২৫ ডিসেম্বর, বুধবার সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিক্সন বড়দিনের ঠিক আগে নিউইয়র্কের রোচেস্টারে গিয়ে তার জীবিত ভাইবোনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ডিক্সন জানান, ‘আমি সারাজীবন ধরে ভেবেছি, কোথাও আমার ভাইবোনরা থাকবে। এটি আমার জন্য একটি বড়দিনের আশ্চর্য ঘটনার মতো!’ গত শনিবার ৫০ জনেরও বেশি আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করেন ডিক্সন। তবে এর আগে, গত আগস্ট পর্যন্ত, তিনি জানতেন না তাদের অস্তিত্ব। তার দত্তক বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান এবং নিজের সন্তান না থাকায় ডিক্সন বেশ একা ছিলেন। ফলে হঠাৎ করেই এত আত্মীয়ের দেখা পাওয়া তার কাছে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা।
ডিক্সন বলেন, ‘আমরা একে অপরকে দেখার পরেই সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এটি ছিল অসাধারণ। আমি কখনো এমন নিঃশর্ত ভালোবাসা অনুভব করিনি, যা আমার নতুন পরিবার থেকে পেয়েছি।’
জানা গেছে, ১৯৪৯ সালে নিউইয়র্কের বাফেলোতে জন্ম নেওয়া ডিক্সনকে তিন মাস বয়সে দত্তক নেয়া হয়েছিল। তার দত্তক বাবা-মা সবসময়ই তার সাথে সত্য কথা বলেছিলেন। তবুও, বাবা-মাকে খুঁজে বের করার বিষয়ে ডিক্সন বলেন, ‘আমি সবসময় তাদের খুঁজতে চেয়েছিলাম, কিন্তু নিউইয়র্ক রাজ্য দত্তক নেয়ার আগে জন্ম সনদগুলো সিল করে দেয়া হয়েছিল, তাই তাদের খুঁজে বের করা অসম্ভব ছিল।’
২০১৯ সালে নিউইয়র্কে একটি নতুন আইন পাস হওয়ার পর, দত্তক নেয়া ব্যক্তিদের আসল জন্ম সনদ উন্মুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে, গত আগস্টে ডিক্সন তার আসল জন্ম সনদ পান। সনদে তিনি জানতে পারেন, তার বাবা ছিলেন রবার্ট বাড রোমিগ। তখন তিনি বাবার নাম দিয়ে গুগলে সার্চ করেন এবং একটি মৃত্যুবার্ষিকীর বিজ্ঞাপন পান, যেখানে বাবার ছবি ছিল। বাবার সঙ্গে চেহারার সাদৃশ্য দেখে ডিক্সন অবাক হন এবং বিজ্ঞাপন থেকেই তিনি বুঝতে পারেন যে তার আরও ভাই এবং এক বোন রয়েছে। তবে কেন তাকে দত্তক দেয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে কিছুই জানেন না ডিক্সন।
তার বাবা ছিলেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শিক্ষার্থী এবং মা ছিলেন সেই বিভাগের সেক্রেটারি।
আরএস//বিএন